এবার কি তবে ইজরায়েল-হামাস সংঘাতে বিরতি ঘটবে? আন্তর্জাতিক মহল বলছে, এমন একটা আশা জাগলেও জাগতে পারে। কারণ, প্যালেস্তাইনের মাটিতে ঘাঁটি গেড়ে থাকা জঙ্গিগোষ্ঠী হামাস-এর তরফে জানানো হয়েছে, তারা ৩৪ জন পণবন্দির নামের একটি তালিকা অনুমোদন করেছে।
এই তালিকাটি দেওয়া হয়েছিল ইজরায়েলের তরফে। হামাস নেতৃত্ব স্থির করেছে, ওই ৩৪ জন পণবন্দিকে বিনিময় সমঝোতার মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হবে। রবিবার সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-এর তরফে এই খবর সামনে এসেছে। একদল আধিকারিককে উদ্ধৃত করে তারা এই দাবি করেছে।
রয়টার্স সূত্রে খবর, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গাজা থেকে যাতে ইজরায়েলের সেনা সরে যায় এবং স্থায়ীভাবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা যায়, তার জন্য সবরকমভাবে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
যদিও ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে এমন কোনও তালিকা, যাতে হামাস অনুমোদন দিয়েছে - এই সংক্রান্ত কোনও খবরের সত্যতা স্বীকার করা হয়নি। বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, তাদের কাছে হামাস অন্তত এমন কোনও তালিকা পাঠায়নি।
এদিকে, হামাস ও ইজারায়েলের মধ্যে পাকাপাকিভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর করতে আমেরিকা এবং আরব রাষ্ট্রগুলি ইতিমধ্যেই হস্তক্ষেপ করেছে। তা সত্ত্বেও, রবিবার গাজায় ফের বিমান হামলা চালায় ইজরায়েল। সূত্রের দাবি, এমন তিনটি আলাদা বিমান হামলায় অন্তত ১৪ জন প্যালেস্তেনীয়র প্রাণ গিয়েছে।
প্যালেস্তাইনের স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা বলছেন, এই হামলার জেরে সপ্তাহান্তে মৃতের সংখ্য়া বেড়ে হল ১০২!
অন্যাদিকে, ইজরায়েলের সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, সপ্তাহান্তে গাজায় ১০০টিরও বেশি নিশানা ধ্বংস করেছে তারা। বরাবরের মতো এবারও তাদের যুক্তি হল, ওই সমস্ত জায়গাতেই নাকি হামাস জঙ্গিদের ঘাঁটি গেড়ে থাকার খবর ছিল। এবং এর ফলে অন্তত কয়েক ডজন হামাস জঙ্গিকে নিকেশ করতে তারা সক্ষম হয়েছে।
ইজরায়েলের সেনার তরফে আরও দাবি করা হয়েছে, তারা এমন একটি রকেট উৎক্ষেপণস্থল ধ্বংস করে দিয়েছে, যেখান থেকে সাম্প্রতিক অতীতে ইজরায়েলে হামলা চালানো হয়েছে।
তথ্য়াভিজ্ঞ মহল বলছে, মার্কিন মুলুকে পালাবদলের কারণেই ইজরায়েল এবং হামাস - দুই পক্ষের উপরেই স্থায়ীভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার এবং এই সংক্রান্ত একটি সমঝোতায় আসার জন্য চাপ বাড়ছে। ইজরায়েলের পণবন্দিদের মুক্তি সংক্রান্ত নামের তালিকায় হামাসের 'অনুমোদন' সেই চাপেরই ফলশ্রুতি বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। প্রসঙ্গত, চলতি মাসেরই ২০ তারিখ ফের একবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে বসবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গত সপ্তাহান্তেও দোহায় থেকে গিয়েছে ইজরায়েলের একটি প্রতিনিধিদল। পণবন্দিদের বিনিময় নিয়ে কিছুটা ধীর গতিতে হলেও আলোচনা চলছে। ইজরায়েলি পণবন্দিদের বিনিময়ে প্যালেস্তেনীয় বন্দিদের ছাড়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
সূত্রের দাবি, গাজায় এখনও প্রায় ১০০ জন পণবন্দি রয়েছেন। ২০২৩ সালে হামাস যখন হামলা চালিয়েছিল, তখনি প্রায় ২৫০ জনকে বন্দি করেছিল। এই ১০০ জনও তখন থেকেই গাজায় জঙ্গিদের ঘাঁটিতে আটকে রয়েছেন। বাকিরা ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন বলে অনুমান সংশ্লিষ্ট মহলের।